
কোনো এক কোকিল ডাকা সকালে প্রিয় মানুষটি পকেটে একখানা কাগজ গুঁজে দিয়ে আড়চোখে আপনার দিকে চেয়ে মিটিমিটি হেসে বলে, একা একা পড়ো কিন্তু...! এ কথা দু’এক সেকেন্ডের জন্য হলেও বুকের গহীন কোণে আনন্দের এক সমীরণ ঢেউ খেলে কি যাবে না? জানালায় বাইরের দিকে দৈনন্দিন ব্যস্ত জীবনছবি দেখতে দেখতে মুহূর্তে হাতখানা কি নিশপিশ করবে না? কতক্ষণ পরে চিরকুটটি খুলে শব্দগুলোর মাঝে ঝড় তুলবে?
প্রেমপত্র শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। প্রেমে পড়েনি এমন মানুষের সংখ্যা নেই বললেই চলে। প্রেম বিষয়টি ভাবগত। প্রেমের ধরণ, রকম-সকমেও রয়েছে গাঢ় রকমের ভিন্নতা। আজকাল ফেসবুক মেসেঞ্জার, টুইটার, হোয়াটস অ্যাপ ইত্যাদি নানা আধুনিকতার ভিড়ে প্রেমপত্র হারিয়ে গেলেও অনুভবের প্রথম অনুভূতি কিন্তু হারিয়ে যায়নি।
বিকেলের সোনালি পড়ন্ত আলোকে সাক্ষী রেখে হাতে হাতে পৌঁছে যাওয়া সেসব প্রেমপত্র আজকের প্রজন্মের কাছে হয়তোবা অচেনা। সময়ের দৌড়ে হয়তো চিঠিপত্র লেখার সময় হয়ে ওঠে না। তবুও যদি প্রিয় মানুষের জন্য সময় বের করে মনের না বলা কথাগুলো লিখেই ফেলেন, তবে পত্রটি প্রিয় মানুষটির হাতে পড়তেই কেমন এক ম্যাজিক।
একঘেয়ে জীবন মুহূর্তেই হয়ে উঠতে পারে মারাত্মক চাঙ্গা। প্রযুক্তির উৎকর্ষে চিঠিপত্র আজ জাদুঘরের উপাদান হলেও একসময় পৃথিবী কাঁপানো মহানায়করাও প্রেমপত্র লিখেছেন গোপনে। প্রেমের গোপন সংকেত নাড়া দেয় আজও যারা বেঁচে আছেন সেই সব প্রেমিক-প্রেমিকাকে।
'তোমার মায়াময় রূপের বাঁধনে বুকভাঙা এক পাগল আমি। আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি। এতটাই উন্মত্ত আমার এ ভালোবাসা। এখন চূড়ান্ত পরিণতির প্রহর গুনছে ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে। আমার এ দরিদ্র ভালোবাসা হয়তো তোমাকে সুখ গড়ে দিতে পারবে না, তবুও আমৃত্যু চেষ্টা করে যাব তোমার মুখের হাসি অম্লান, অক্ষত রাখতে। হে প্রেয়সী, দেবে কি আমাকে সে সুযোগ তোমার অনামিকায় আমার দেয়া আংটি পরাতে?'
এমন প্রেমপত্র কতজনে কতজনার কাছেই না লিখেছে।কারো ভাগ্যে এসেছে সেই প্রেয়সী আবার কেউবা ধুঁকে ধুঁকে মরেছে।প্রেয়সীর জন্য বানানো আংটি আজও অক্ষত রয়েছে।কিন্তু নেই সেই মানুষটি।
ফেমাসনিউজ২৪/এফএম/এমএম